আপেল মাহমুদ, রুহিয়া (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি :
২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে অবকাঠামো তৈরিতে ১০ শতাংশ পরিবেশ বান্ধব ইট ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে নির্মাণ খাতে শতভাগ পরিবেশ বান্ধব ইট ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার।
রাজ্জাক গ্রুপের চেয়ারম্যান হাবিবুল ইসলাম জানান, পরিবেশ বাঁচাতে পরিবেশ বান্ধব ইটের বিকল্প নেই। এ চিন্তা থেকেই এই কারখানা চালু করেছি। গত বছরের ১৯ নভেম্বর ইট উৎপাদন শুরু করেন তিনি। এই কারখানায় ইট তৈরিতে আনুপাতিক হারে ৪০ শতাংশ ফ্লাই অ্যাশ, ৪০ শতাংশ বালু, ১৫ শতাংশ সিমেন্ট ও ৫ শতাংশ পাথরকুচি ব্যবহার করা হয়।
কারখানাটির নাম ‘বাবলু সুপার ব্রিকস ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড’। এটি রাজ্জাক গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। কারখানাটি ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার শিবগঞ্জ পারপুগী গ্রামে।
কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, বাংলাদেশের প্রথম বিজ্ঞান সম্মত ও অত্যাধুনিক কম্পিউটারাইজড ভাইব্রো মাল্টি ক্যাভিটি মেশিন দ্বারা প্রস্তুত পরিবেশ বান্ধব অ্যাশ ব্রিক্স তৈরি হচ্ছে।
ইট উৎপাদনের কথা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ফসলি জমির উপরিভাগের (টপ সয়েল) মাটি কেটে জমির উর্বরতা হ্রাস, জ্বালানি কাঠ, গাড়ির পুরোনো টায়ার ও রাবার পুড়িয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির নানা চিত্র। কিন্তু এই ইটভাটায় এসবের বালাই নেই। এখানে আধুনিক যন্ত্রে ফ্লাই অ্যাশ (কয়লা দহনে সৃষ্ট বিশেষ ছাই), সিমেন্ট, বালু ও পাথরকুচি দিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব ইট।
ঠাকুরগাঁও সদরের শিবগঞ্জ পারপুগী গ্রামে কারখানাটি ঘুরে দেখা যায়, কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ‘ভাইব্রো ক্যাভিটি’ যন্ত্রে উৎপাদিত হচ্ছে ইট। স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ অ্যাশ, বালু, সিমেন্ট ও পাথরকুচি এসে মিশে যাচ্ছে। এরপরই যন্ত্রের চাপে তৈরি হচ্ছে ইট। এসব ইট পোড়ানোরই প্রয়োজন পড়ছে না।
কারখানার ভাইব্রো ক্যাভিটি নামের যন্ত্রে প্রতি ৮ ঘণ্টায় ২০ হাজার ইট তৈরি করা সম্ভব। সম্প্রতি এ কারাখানার ইট দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছেন জেলা শহরের হাজীপাড়ার বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন। তিনি বলেন, এই ইট দিয়ে বাড়ি নির্মাণের ফলে সৌন্দর্য বেড়েছে। পাশাপাশি খরচও কম হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহারুল আলম মণ্ডল বলেন, পোড়ামাটির ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ইট দিয়ে অবকাঠামো নির্মাণ বিষয়ে সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করছি।