আপেল মাহমুদ, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। পৌর মেয়র পদে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগের ১৩ জন প্রার্থীর সরব উপস্থিতি দেখা গেলেও নিঃশব্দে রয়েছে বিএনপির প্রার্থীরা। এখনো বিএনপির কোনো প্রার্থী নির্বাচনের ঘোষণা দেননি কিংবা প্রচারণায় নামেননি।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার বর্তমান মেয়রের মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হবে। ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা শুরু হয়ে গেছে।
মনোনয়ন প্রত্যাশীরা পোস্টার-ব্যানার লাগিয়ে নিজেদের প্রচারনা চালাচ্ছেন। নির্বাচন ঘিরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নেতারা সরব হয়ে উঠেছেন। তাঁরা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করে পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে পোস্টার-ব্যানার, ফেস্টুন লাগানো শুরু করেছেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে পৌর এলাকায় উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে নির্বাচন ঘিরে নিঃশব্দে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের অন্তত ১৩ জন নেতা মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন।
তন্মমধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল মজিদ (আপেল) মেয়র পদে নিজের সম্ভাব্য প্রার্থিতার বিষয়টি জানান দিতে পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়েছেন। পাশাপাশি গণসংযোগ করছেন। উঠান বৈঠক করে পৌরসভার উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ স ম গোলাম ফারুক (রুবেল) মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে ফেসবুকে একটিভ রয়েছেন। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের আশ্বাস সহ পৌরবাসীর দোয়া চেয়ে নিজ দলের নেতাদের ছবি দিয়ে পোস্টার ও বোর্ড লাগিয়েছেন।
এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান (রিপন), জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য বাবলু রহমান, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান সরকার শহরে প্রচারণা বোর্ড, ফেস্টুন ও পোস্টার লাগিয়েছেন।
এছাড়াও গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি তহমিনা আখতার মোল্লা, জেলা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল হক মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক মেয়র এস এম এ মঈন, জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক বেলাল হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাজমুল শাহ অ্যাপোলো ও কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগ সদস্য আঞ্জুমান আরা মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তহমিনা আখতার মোল্লা জানান, পৌরবাসী তাঁর পক্ষে থাকলেও স্থানীয় ষড়যন্ত্রের কারনে তিনি হেরেছেন। তাই পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে তিনি এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মু. সাদেক কুরাইশী বলেন, দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছে আবেদন চাওয়া হবে। এরপর যাচাই-বাছাই করে স্থানীয় নির্বাচনী মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানো হবে। মনোনয়ন বোর্ডই দলের প্রার্থী চূড়ান্ত করবে।
অপরদিকে, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, আল মামুন, সুলতানুল ফেরদৌস নম্র চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ও অর্থ সম্পাদক মো, শরিফুল ইসলাম শরিফ।
বর্তমান পৌর মেয়র ও ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন জানান, দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই কাজ করবো। আমাকে দিলে আবারও প্রার্থী হবো।
ঠাকুুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা তৌমুর রহমান জানান, পৌর নির্বাচনের ব্যাপারে দলীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থিতার বিষয়টি চুড়ান্ত করা হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানাযায়, ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর।
উল্লেখ্য, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় ধাপে ৬০টির মত পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চলতি সপ্তাহে এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। এবার মোট চারটি ধাপে ১৯৪টি পৌরসভার ভোট হবে। ইতিমধ্যে প্রথম ধাপে ২৫টি পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।