রাশেদুল হক, শেরপুর (বগুড়া) থেকে:
বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রাম। রাস্তার পাশ দিয়ে যেতেই দেখা যায় ৮ থেকে ১০ জন মহিলা গোলাকার হয়ে বসে ছন দিয়ে ডালা বুনাচ্ছেন। তাদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরী বিভিন্ন প্রকার ছনের ডালা যাচ্ছে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশে।
এই ছনের ডালা বুনিয়ে দারিদ্রতা ঘোচাতে চায় তারা। সংসারের কাজের পাশাপাশি এ কাজ করে তারা মাসে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা আয় করছেন। শুধু গোপালপুর নয়। উপজেলার হাপুনিয়া, টুনিপাড়া, খামারকান্দি, গাড়িদহ, কেল্লা, ভাতারিয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের শতশত নারীরা ছোনের ডালা বুনিয়ে আয় করছেন। সেই আয় দিয়ে স্বামীর সংসারের সহযোগিতাও করছেন। তবে পুজি না থাকায় পাইকারদের হয়ে কাজ করতে হচ্ছে তাদের।
গোপালপুর গ্রামের সামছুল শেখের মেয়ে তারা বানু জানান, ছোট বড় ৪ টি ডালা মিলে ১টি সেট হয়। সেই এক সেট ডালা বুনিয়ে আমরা ৪৫০ টাকা পাই। প্রতি সপ্তাহে আমরা ২ সেট ডালা বুনতে পারি।
একই গ্রামের আলম আকন্দের স্ত্রী আন্না খাতুন, তাহের আকন্দের স্ত্রী কুলসুম বেগম জানান, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের টাকা পয়সা নাই। তাই অন্যের কন্ট্রাকের কাজ করি। করোনা ভাইরাসের কারণে ছেলে মেয়েদের স্কুল বন্ধ থাকায় তারাও আমাদের সহযোগিতা করছে বলেই একটু বেশি ডালা বুনতে পারি। তাছাড়া যাদের কাজ করি তারা আমাদের সপ্তাহের টাকা সপ্তাহে দিতে পারেনা। তাতে আমাদের খুব সমস্যা হয়। সরকার যদি আমাদেও সহজ শর্তে ঋনের ব্যবস্থা করতো তাহলে আমরাও স্বাবলম্বী হতাম।
এবিষয়ে পাইকারী ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের নিজের টাকায় ডালা বুনানোর জিনিসপত্র কিনতে হয়। তাই মাঝে মাঝে উদ্যোক্তা নারীদের সপ্তাহের টাকা সপ্তাহে দিতে পারিনা। তাছাড়া যাদের সরকারি সুবিধা পাওয়ার কথা তারা পায় না। পাচ্ছে ঢাকার বড় বড় মহাজনরা। তাই এসব বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ বলেন, এই উপজেলায় যারা নারী উদ্যোক্তা আছেন তাদের বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা প্রশিক্ষন পায় নাই তাদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি ভাবে যে সকল প্রকল্প দেয়া হয় প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত উদ্যোক্তাদের মাঝে তা বন্টন করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারী উদ্যোক্তাদের উপর খুব গুরুত্ব দিয়েছেন।