শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি :
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি গ্রামে স্ত্রীর পরকীয়ায় নিঃস্ব হয়ে বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বিচারের আশায় পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন রং মিস্ত্রী আব্দুল আহাদ।
স্ত্রীকে লিখে দেয়া জমি প্রেমিকের নামে দলিল করে দেয়ার প্রতিবাদ করায় প্রেমিক রউফ তার বাড়ি ভাংচুর করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। এতে বৃদ্ধ মা ও ১২ বছরের মেয়েকে নিয়ে অন্যের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন আব্দুল আহাদ।
এ ঘটনায় রোববার সন্ধ্যায় (৪ অক্টোবর) আব্দুল আহাদ বাদি হয়ে তার স্ত্রী জেসমিন খাতুন ও পরকীয়া প্রেমিক আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগসূত্রে জানাগেছে, শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দি উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত মমতাজ আলীর ছেলে রং মিস্ত্রী আব্দুল আহাদ ১৫ বছর আগে শাজাহানপুর উপজেলার মাড়িয়া মোল্লাপাড়া গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিনের মেয়ে জেসমিন খাতুনকে বিয়ে করেন।
পৈত্তিক বসতবাড়ি বিক্রি করে গত ০৭ মার্চ ২০১৯ সালে ২০২৪ নং দলিল মূলে জয়নাল আবেদীন গংদের কাছ থেকে খামারকান্দি মৌজার সাবেক দাগ নং-৩৮৬,৩৮৭ হাল দাগ ২৫০, ২৫১ এর ২০ শতক জমির মধ্যে ৮ শতাংশ জমি স্বামী-স্ত্রী দুই জনের নামে ক্রয় করে রাস্তা সংলগ্ন বাড়ি করে বসবাস করে আসছে আব্দুল আহাদ।
জীবিকার তাগিদে আব্দুল আহাদ বিভিন্ন জেলায় গিয়ে রং মিস্ত্রীর কাজ করেন। এরই সুযোগে খামারকান্দি পূর্বপাড়া গ্রামের দুদু প্রামানিকের ছেলে আব্দুর রউফের সাথে জেসমিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই এক পর্যায়ে গত ঈদ-উল-আযহার দিন রাতে প্রেমিক যুগল অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় স্বামী আব্দুল আহাদ তাদের ধরে ফেলে।
এঘটনায় গত ৮ আগস্ট সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাবের উপস্থিতিতে সালিশী বৈঠক হয়। সালিশে জেসমিন সংসার করবে না বলে জানিয়ে দিয়ে তার মা, বড় বোন, ছোট ভাইয়ের সাথে পিতার বাড়ীতে চলে যায়।
এর পূর্বে কৌশলে জেসমিন উক্ত জমির মূল দলিল, ভায়া দলিল, খাজনা-খারিজ সহ যাবতীয় কাগজপত্র নিজের কাছে নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে জেসমিন খাতুন গত ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে যৌতুক বিরোধ আইন (সংশোধন/১৮) এর ৩/৪ ধারায় আহাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
আহাদকে নিঃস্ব করার জন্য তার নামের জমির অংশ প্রেমিক আব্দুর রউফকে গত ১৬ আগস্ট ২০২০ সালে দলিল করে দেয়। জমি লিখে দেয়ার পর তা দখলে নেয়ার জন্য গত শনিবার (৩ অক্টোবর) সকালে আব্দুল আহাদের বাড়ি ভাংচুর করে তালা ঝুলিয়ে দেয় আব্দুর রউফ। এতে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পরেছেন আব্দুল আহাদ।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগি আব্দুল আহাদ বলেন, ১৫ বছর হলো জেসমিনের সাথে সংসার করছি। আমার ১২ বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। সে এমন কাজ করবে আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আমার বৃদ্ধ মা এবং ১২ বছরের মেয়েকে নিয়ে দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছি।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।