ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা :
বগুড়ার ধুনট পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হট্টোগোল ও উত্তেজনার মধ্য দিয়েই সমাপ্ত হতে যাচ্ছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ১২টার পর থেকে সব ধরনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা বন্ধ থাকবে। তবে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকলেও প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থদের মধ্যে নির্বাচনী বিরোধ থেকেই যাচ্ছে।
বুধবার (২৭ জানয়ারি) বিকেলে একই সময় পাশাপাশি স্থানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচনী মিছিল ও সমাবেশ হওয়ায় ধুনট বাজার এলাকায় উত্তেজনাও ছড়িয়ে পড়ে।
জানাগেছে, ধুনট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন প্রার্থী এবং কাউন্সিলর পদে ৩৩ প্রার্থী ও সংরক্ষিত আসনে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ধুনট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক টিআইএম নূরুন্নবী তারিক (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (সদ্য বহিস্কৃত) ও বর্তমান মেয়র এজিএম বাদশাহ্ (জগ), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পৌর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ও সাবেক মেয়র আলিমুদ্দিন হারুন মন্ডল (ধানের শীষ) ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতা সাহা সন্তোষ (কাস্তে)।
এদিকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা না ঘটলেও মাঝে মধ্যেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা যায়। বুধবার বিকেলে একই সময় পাশাপাশি স্থানে সমাবেশ ও ধুনট বাজারে শোডাউন বের করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নূরুন্নবী তারিক ও বিদ্রোহী প্রার্থী এজিএম বাদশাহ্। একারনে উভয় প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উত্তোজন ও হট্টোগোল শুরু হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এরপর বিএনপির প্রার্থী আলিমুদ্দিন মন্ডলও তার কর্মীসমর্থকদের নিয়ে শোডাউন বের করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী টিআইএম নূরুন্নবী তারিকের নৌকা প্রতীকের পক্ষে বিশাল শোডাউন বের করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে ধুনট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
জনসভায় বক্তব্য রাখেন, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল হাসান রিপু, বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শামস্-উল আলম জয়, মেয়র প্রার্থী ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিআইএম নরুন্নবী তারিক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই খোকন, সহ-সভাপতি এমপি পুত্র প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল সনি প্রমূখ।
এদিকে পৌর নির্বাচনে কোন প্রার্থীর অভিযোগ না থাকলেও এক সাক্ষাৎকারে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী এজিএম বাদশাহ্।
এজিএম বাদশাহ বলেন, ভোটাধিকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আমার নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় বাধা প্রয়োগ সহ আমার কর্মী সমর্থদের মারধর এবং হুমকি পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে। তাই আসন্ন পৌরসভায় সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।
তবে বিদ্রোহী প্রার্থীর অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী টিআইএম নূরুন্নবী তারিক বলেন, নৌকা প্রতীকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষানিত হয়েই বিদ্রোহী প্রার্থী বানোয়াট অভিযোগ করেছেন।
অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী আলিম মুদ্দিন হারুন মন্ডল বলেন, আমি মেয়র থাকাকালীন সময় অনেক উন্নয়ন কাজ করেছি। তাই পৌরবাসী আমাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে আশাবাদি।
ধুনট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোকাদ্দেছ আলী জানান, ধুনট পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭১৩ জন। তন্মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ৬৩৭ জন এবং মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৭৩জন। আগামী ৩০ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি ভোট কেন্দ্রের ৩১টি বুথে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করতে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।