স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধান বার্তা :
বগুড়ার ধুনটে বড় ভাইয়ের সঙ্গে খেলতে খেলতেই বটি দিয়ে গলা কেটে প্রাণ যায় ছোট ভাই তৌহিদ সরকারের (৫)। হত্যাকান্ডের ঘটনার দুই দিন পর ক্লু-লেস এই মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারী) বিকেল ৫টার দিকে ধুনট থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য নিশ্চিত করেন বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারী সকালে ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের এলাঙ্গী ফকিরপাড়া গ্রামের গফুর সরকারের দুই ছেলে তৌহিদ সরকার (৫) ও সজিব সরকার (৮) তাদের নিজ বাড়ীতে বটি দিয়ে গরু জবাই জবাই খেলছিল।
এসময় বড় ভাই সজিবের হাতে থাকা ধারালে বটি দিয়ে ছোট ভাই তৌহিদ সরকারের গালা কেটে রক্তরক্ষন হতে থাকে। পরে সজিব তার হাতের বটি বাহিরে ফেলে দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনার সময় তার মা দুলালী বেগম পাশের জমিতে কাজ করছিল। পরে দুলালী বেগম ও পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে এঘটনাটি উদঘাটন করতে পুলিশ ওই পরিবারের তিনটি বিষয় নিয়ে তদন্ত শুরু করে। কিন্তু কিছুতেই কোন ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে হত্যাকান্ডের দুই দিন পর আমাদের টিম এঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
তিনি বলেন, যেহেতু যে ঘটনাটি ঘটিছে সেও শিশু। সুতরাং শিশুকে আমরা অপরাধি বলতে পারি না। তাই একজন সমাজসেবা কর্মকর্তার (প্রবেশন কর্মকর্তার) মাধ্যমে সজিবকে তার পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
তবে পুলিশ সুপার অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, অভিভাবকদের উচিত তার সন্তানদের প্রতি আরেকটু বেশি খেয়াল রাখা। সন্তানরা যেন খেলাধুলার একটি ভাল পরিবেশ পায়, সেই পরিবেশটা নিশ্চিত করা। অন্য কোন কিছু নিয়ে খেলাধুলা না করা, যেটা হতে পারে সবচেয়ে ভয়ংকর।
সংবাদ সম্মেলনে, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) গাজিউর রহমান, ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা, ওসি তদন্ত জাহিদুল হক সহ পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, তৌহিদ সরকারের বাবা আব্দুল গফুর দীর্ঘদিন ধরে মালোয়েশিয়ায় কর্মরত রয়েছেন। তার বসতবাড়ীতে তার ছোট ভাই, বাবা-মা, দুই ছেলে ও এক মেয়ে এবং স্ত্রী দুলালী বেগম থাকেন। শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) সকালে বাড়ীর সকলেই কাজ করার জন্য মাঠে চলে যান। তখন তৌহিদের মা দুলালী বেগম তার বাড়ির পাশে জমিতে কাজ করছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে দুলালী বেগম ঘরে ঢুকে তৌহিদ সরকারকে (৫) গলা কাটা অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন।
পরে তার চাচা সোলায়মান সরকার তাকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসক তৌহিদকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে ধুনট থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করে। এদিকে হত্যাকান্ডের দুই দিন পর এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করলো পুলিশ।