স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা :
বগুড়ার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল দখল নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, হামলা, ভাংচুর ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে বগুড়ার চারমাথা বাস টার্মিনালে এঘটনা ঘটে।
হামলায় মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুর ইসলামের অফিস ও তার মালিকানাধীন শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের কাউন্টার ভাচুর করেছে প্রতিপক্ষ।
এছাড়া হামলাকারীদের হাতে ডিএসবির রমজান আলী নামে একজন ওয়াচার ও গাজি টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন রাজু আহম্মেদ সহ ১০ জন বাস যাত্রী ও পথচারি আহত হয়েছেন।
তবে সংঘর্ষের শুরুর দিকে হামলাকারীদের ব্যাপারে পুলিশ নমনীয়তা দেখালেও পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে পুলিশ লাঠি চার্জ ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা এই ঘটনার বর্ননা দিয়ে বলেন, বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রন নিয়ে সাবেক আহ্বায়ক আওয়ামীলীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম মোহন ও তার বিরোধী গ্রুপের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব, মামলা মোকর্দমা চলার মধ্যেই মঙ্গলবার সকালের দিকে মোহন তার সহস্রাধিক অনুসারিদের নিয়ে শহরতলীর চারমাথা বাস টার্মিনালের পুর্বদিকে অবস্থান নেন।
অপরদিকে খবর পেয়ে তার প্রতিপক্ষ স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম তার অনুসারিদের নিয়ে করে দখল প্রতিরোধের উদ্যোগ নেন। সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করলে উৎসাহিত হয়ে মোহনের সমর্থকরা সশস্ত্র বেশে টার্মিনাল, মোটর মালিক গ্রুপের অফিস, কাউন্সিলর আমিনুলের অফিস ও আমিনুলের মালিকানাধীন শাহফতেহ আলী পরিবহন কাউন্টারের দিকে ধাওয়া করে এগিয়ে যায়।
পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আমিনুল ও তার সমর্থকরা পিছু হটে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ফলে বিনা বাধায় মোহন সমর্থকরা তাদের এলাকায় রীতিমত ধ্বংসলীলা ও লুটতরাজ চালায়।
এসময় হামলাকারীরা ৫টি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয় এবং অফিসের সব আসবাবপত্র ভাংচুর করে আগুন দিয়ে মোবাইল ও টাকা পয়সা লুটে নেয়।
এসবের চিত্র ধারন করার সময় হামলাকারীরা গাজি টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন রাজু আহম্মেদকে পিটিয়ে জখম করে। এছাড়াও সাংবাদিক ভেবে ডিএসবি ওয়াচার রমজান আলীকেও ছুরিকাঘাত করে সন্ত্রাসীরা। এছাড়া তাদের হাতে কয়েজন বাসযাত্রীও আহত হয়।
পরে পরিস্থিতির অবনতি দেখে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ উপস্থিত হয়ে তারা লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তবে ঘটনার পর থেকে বাস টার্মিনালের সকল টিকেট কাউন্টার বন্ধ রয়েছে। টার্মিনাল থেকে বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক যান চলাচলও। যে কোন মুহুর্তে পুনরায় সংঘর্ষ শুরুর আশংকায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে ।
এব্যাপারে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবীর জানান, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।